বাকেরগঞ্জে ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা ছাত্রীর মৃত্যু

প্রকাশিত: ১০:২৯ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৯, ২০২৩
বাকেরগঞ্জ প্রতিনিধি
বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার দূর্গাপাশা ইউনিয়নের এক লম্পট যুবকের ধর্ষণে দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া ফাতেমা আক্তার মিম নামে এক মাদ্রাসার ছাত্রী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে। ছাত্রীর গর্ভজাত শিশু অপসারণের চেষ্টায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয় ।
মৃত মাদ্রাসার ছাত্রী দূর্গাপাশা ইউনিয়নের ইছাপুরা গ্রামের ওমর ফারুক হাওলাদারের মেয়ে ও ইউনিয়নের দর্জি বাড়ি দাখিল মাদ্রাসার দশম শ্রেণীর ছাত্রী ।
বিগত নয় দিন বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসিইউ বিভাগে চিকিৎসাধীন ছিলেন। রবিবার (৮ অক্টোবর ২৩) সকাল দশটা তার মৃত্যু হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাকেরগঞ্জ থানা পুলিশ।ঘটনা সূত্রে জানাযায় মৃত রাজ্জাক গাজী পুত্র লম্পট শাকিল গাজী (২৩)এর দ্বারা ধর্ষিত হয়ে তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয় মাদ্রাসার ছাত্রী। লম্পট সাকিল অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার বিষয়ে জানতে পারলে গর্ভজাত শিশু ঔষধ খাইয়ে অপসারণের চেষ্টা করে এতে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়ে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু বরণ করেন ঐ কিশোরী।ছাত্রীর পিতা ওমর ফারুক বলেন শাকিল গাজী তাদের পাশ্ববর্তী এলাকার হওয়ায়, তার মেয়ে মাদ্রাসায় আসা-যাওয়ার পথে শাকিল গাজীর সাথে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। তিনি আরো জানায় তার ছোট ছেলে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ নিয়ে যায়‌ই । বাড়িতে কেউ না থাকায় শাকিল গাজী আমাদের বাড়িতে যায় ,ও তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করে।এতে আমার মেয়ে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পরে। বিষয়টি আমার মেয়ে শাকিলকে জানালে তার বড় ভাইয়ের স্ত্রীকে নিয়ে পাশ্ববর্তী থানা বাউফলের কালি সুরি বাজারে একটি ক্লিনিকে নিয়ে যায় । ক্লিনিকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানতে পারে ঐ ছাত্রী তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা এর পর থেকে শাকিল গাজী ও তার বড় ভাইয়ের স্ত্রী ও বোন ইয়াসমিন মিলে গর্ভজাত শিশু অপসারণের চেষ্টা করে ।লম্পট শাকিল গাজী উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নের ভাতশালা গ্রামের মৃত রাজ্জাক গাজী ছেলে।
মৃত্যু শিক্ষার্থীর মা জানান, মেয়ের শারীরিক পরিবর্তন দেখে বেশ কয়েকদিন ধরে তার সন্দেহ হয়। অভাবের সংসার দেখে ডাক্তারে কাছে নিয়ে জাইতে পারি নাই।এরপর মেয়ের কাছে জানতে চাইলে সে ঘটনা খুলে বলে। পরে ধর্ষক শাকিল গাজীর কাছে জানতে চাইলে সেও অপরাধের কথা স্বীকার করে। এনিয়ে আমাদের এলাকার মুরুব্বী অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য নুর মোল্লার নিকট জানালে তিনি শাকিলের আপন বড় ভাই জাফর গাজী ও নিকট আত্মীয় ইউপি সদস্য নজরুল ইসলামকে জানালে তারা আজ না কাল বলে ঘুরাঘুরি করতে থাকেন। এদিকে মেয়েকে নিয়ে গর্ভজাত শিশু অপসারণ করতে বিভিন্ন ঔষধ পানি খাইয়েছেন , যার কারণে আমার মেয়ে অসুস্থ হয়ে বিছানায় কাতরাচ্ছে , ও প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছে। গত (৩০ সেপ্টেম্বর ২৩) শনিবার সন্ধ্যায় কালিসুরি বাজারে একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে নিয়ে যাই, ক্লিনিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক শারীরিক অবস্থার অবনতি দেখে বরিশাল নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন, চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী তাকে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ঔষধ খাওয়ানোর কারণে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয় এবং ঔষধ খাওয়ার পরে বাচ্চা নস্ট হয়ে যায়, তাই নস্ট বাচ্চা পেট থেকে বের করার জন্য অপারেশন করা হয় । এতে তার আরো শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে আইসিইউ বিভাগে রাখা হয়। আর আইসিইউতে বসেই তার মৃত্যু হয়।
ছাত্রীর মার নিকট পূর্বের ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন , আমাদের ফরিদপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এসএম শফিক ও শাকিলের নিকট আত্মীয় ইউপি সদস্য নজরুল এবিষয়ে শালিস মিমাংসা করবে বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন তাই আমরা থানায় জানাই নি এছাড়াও মান-সম্মানের ভয়ে আমরা কিছু করিনি।
মৃত্যু বিষয়ে বাকেরগঞ্জ থানা ওসি তদন্ত মোস্তফা কালবেলাকে জানান ফাতেমা আক্তার মিম নামে এক মাদ্রাসার ছাত্রীর অন্তঃসত্ত্বা হয়ে মৃত্যু কথা শুনেছি ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে, অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।



error: Content is protected !!