বিজিএমইএ ভবন ভাঙার সময় পরিবর্তন করা হয়েছে। বুধবার সকাল ১০টায় ভবন ভাঙার কার্যক্রম উদ্বোধন করার কথা থাকলেও তা আড়াই ঘণ্টা পিছিয়ে দেয়া হয়েছে।
গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. ইফতেখার হোসেন যুগান্তরকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, অনিবার্য কারণবশত গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী কর্তৃক হাতিরঝিল এলাকায় অবস্থিত বিজিএমইএ ভবন ভাঙার কার্যক্রম উদ্বোধন কর্মসূচি ২২ জনুয়ারি ২০২০ তারিখ সকাল ১০টার পরিবর্তে দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে অনুষ্ঠিত হবে। অনাকাঙ্ক্ষিত অসুবিধার জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি।
সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের পর এই ভবন থেকে যাবতীয় কার্যক্রম এ বছরের শুরুতে ঢাকার উত্তরায় নতুন ভবনে সরিয়ে নিয়েছিল বিজিএমইএ।
১৯৯৮ সালে সরকারের কাছ থেকে জমি পেয়ে কারওয়ানবাজারের হাতিরঝিলে ভবন গড়ে তুলেছিল বাংলাদেশের রফতানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ।
জলাধার আইন লঙ্ঘন করে ভবনটি তোলায় ২০১১ সালে তা ভেঙে ফেলার রায় আসে হাইকোর্ট থেকে। পরে আপিল বিভাগও সে রায় বহাল রাখেন।
বিজিএমইএ ভবনটিকে সৌন্দর্যমণ্ডিত হাতিরঝিলের ‘ক্যান্সার’ আখ্যায়িত করেছিলেন হাইকোর্ট। রায়ে বলা হয়েছিল– ‘একটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা হিসেবে বিজিএমইএর আইনের প্রতি আরও বেশি শ্রদ্ধাশীল হওয়া বাঞ্ছনীয় ছিল। তারা তা না করে আইনকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করেছে।’
আদালতের রায়ের পর ভবন খালি করতে কয়েক দফা সময় নিয়েছিল বিজিএমএইএ; এর পর গত এপ্রিলে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-রাজউক ভবনটিতে তালা ঝুলিয়ে দেয়।
এরই মধ্যে ভবনটি ভাঙার এবং ব্যবহারযোগ্য মালামাল কিনতে আগ্রহী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে দরপত্র আহ্বান করে বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। আগ্রহীদের ২৪ এপ্রিল বিকাল ৪টার মধ্যে রাজউক চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন করতে বলা হয়।
তিন মাসের মধ্যে ভবন ভাঙার শর্ত দিয়ে ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আগ্রহী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে বহুতল ভবন ভাঙার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। ভাঙার ব্যাপারে ক্রেতাকে সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হবে।
রাজউকের ওই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর পাঁচটি প্রতিষ্ঠান দরপ্রস্তাব জমা দেয়।
এর মধ্যে মেসার্স সালাম অ্যান্ড ব্রাদার্স এক কোটি ৭০ লাখ টাকা, পিএনএস এন্টারপ্রাইজ ৫৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা, মেসার্স চন্দ্রপুরী এন্টারপ্রাইজ এক কোটি টাকা, ফোর স্টার এক কোটি ৫৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা এবং মেসার্স সামিরা এন্টারপ্রাইজ ৩০ লাখ টাকা দর প্রস্তাব করে।
রাজউকের কর্মকর্তারা জানান, সবকিছু যাচাই-বাছাই শেষে ফোর স্টার নামে প্রতিষ্ঠানটিকে বিজিএমইএ ভবন ভাঙার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
রাজউকের কর্মকর্তাদের বক্তব্য অনুযায়ী, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ভবন ভাঙার জন্য আলাদা কোনো অর্থ পাবে না। দুটি বেইজমেন্টসহ ১৫তলা বিজিএমইএ ভবন ভাঙার পর ব্যবহারযোগ্য মালামাল বিক্রি করে তারা তাদের খরচ ও লাভ উঠিয়ে নেবে।