আলী আজীম,মোংলা থেকে:
দেশের ঐতিহ্যবাহী ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ। বাংলার স্বাধীনতা ও বাঙালির স্বাধিকার অর্জনের লক্ষ্যে মূল দল আওয়ামী লীগের জন্মের এক বছর আগেই প্রতিষ্ঠা পেয়েছিল গৌরব ও ঐতিহ্যের এ ছাত্র সংগঠন। ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠিত এ সংগঠনটি নানা অর্জন, আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে পার করলো তিহাত্তর বছর। ওই দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে আনুষ্ঠানিকভাবে এর যাত্রা শুরু হয়। প্রতিষ্ঠাকালীন এর নাম ছিল ‘পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ’। পাকিস্তান আমলেই ‘মুসলিম’ শব্দটি বাদ দেয়া হয়। স্বাধীনতার পর নাম হয় ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ’। স্বাধীনতার ছয় মাসের মধ্যে ভাঙ্গনেও পতিত হয় এই সংগঠনটি। প্রতিষ্ঠালগ্নে নঈমউদ্দিন আহম্মেদকে আহ্বায়ক করে ১৪ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। এ সময় ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠায় নেতৃত্ব দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। পরের বছর ৫ সেপ্টেম্বর আরমানিটোলায় ছাত্রলীগের প্রথম সম্মেলনে দবিরুল ইসলাম সভাপতি ও মোহাম্মদ আলী সাধারণ নির্বাচিত হন।
১৯৪৯ সালে তৎকালীন পাকিস্তানের প্রথম বিরোধী দল হিসাবে ‘আওয়ামী মুসলিম লীগে’র আত্মপ্রকাশ ঘটে, যা পরে আওয়ামী লীগ নাম ধারণ করে এ দেশের স্বাধিকার ও স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্ব দেয়। এ প্রেক্ষাপটে ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠা বাঙালি জাতির ইতিহাসে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। ৫৪’র সাধারণ নির্বাচনে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ পরিশ্রমে যুক্তফ্রন্টের বিজয়, ৫৮’র আইয়ুববিরোধী আন্দোলন, ৬২’র শিক্ষা আন্দোলনে ছাত্রলীগের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা, ৬৬’র ৬ দফা নিয়ে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের দেশের প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সারাদেশে ছড়িয়ে পড়া, ৬ দফাকে বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ হিসাবে প্রতিষ্ঠা, ৬৯’র গণঅভ্যুত্থানে ছাত্রলীগের নেতৃত্বে পাক শাসককে পদত্যাগে বাধ্য এবং বন্দীদশা থেকে বঙ্গবন্ধুকে মুক্ত করা, ৭০’র নির্বাচনে ছাত্রলীগের অভূতপূর্ব ভূমিকা পালন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে সম্মুখসমরে ছাত্রলীগের অংশগ্রহণ, স্বাধীনতা পরবর্তী সামরিক শাসনের অবসান ঘটিয়ে গণতন্ত্রে উত্তরণসহ প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে ছাত্রলীগের অসামান্য অবদান দেশের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে সংগঠনটি।
সোমবার (৪ জানুয়ারি) বাংলাদেশ ছাত্রলীগের গৌরব, ঐতিহ্য, সংগ্রাম ও সাফল্যের ৭৩ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে মোংলা উপজেলা ছাত্রলীগ,মোংলা পৌর ছাত্রলীগ ও মোংলা সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের যৌথ আয়োজনে সকাল ১০:৩০ মি: দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন এবং বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ শেষে এক বর্ণাঢ্য আনন্দ র্যালী বের হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে দলীয় কার্যালয় এসে শেষ হয়।আনন্দ র্যালী শেষে কেক কেটে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ এর ৭৩ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করা হয়।
এসময় মোংলা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শিকদার ইয়াছিন আরাফাত এর সভাপতিত্বে ও মোংলা পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি কাজী মোয়াজ্জেম হোসেন রানা’র সঞ্চালনায় আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন,বাগেরহাট জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি অধ্যাপক মোল্লা আব্দুর রউফ।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন,মোংলা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবূ তাহের হাওলাদার,মোংলা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহীম হোসেন,মোংলা পৌর আওয়ামীলীগ এর সভাপতি ও বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ মনোনীত মোংলা পৌরসভার মেয়র প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আঃ রহমান,সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব শেখ কামরুজ্জামান জসিম,সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন মিলন,মোংলা উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন।
অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন,মোংলা উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সজীব খাঁন,মোংলা পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ শাহরুখ বাপ্পী ও মোংলা সরকারি কলেজ শাখার সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।