সাবেক এমপি বাবুর আলোচিত ২য় স্ত্রী তানিয়ার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে মামলা দায়ের৷
নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি ॥ হবিগঞ্জ-১ (নবীগঞ্জ-বাহুবল) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান এম এ মুনিম চৌধুরী বাবুর নববিবাহিত ২য় স্ত্রী তানিয়া আক্তারের বিরুদ্ধে প্রতারণা করে টাকা ও স্বর্ণালংকার হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বুধবার (২৭ জুলাই) দুপুরে হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ঝুমুর সরকারের আদালতে তানিয়া আক্তারের বিরুদ্ধে এই আলোচিত মামলা দায়ের করেন সুফিয়া বেগম নামের একই গ্রামের বাদীনি৷ এ মামলাটি বিজ্ঞ আদালত আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।
মামলার আসামীরা হলেন- তানিয়া আক্তার (২৫), তার পিতা কনা মিয়া(৫০), জিতু মিয়া (৪৫), এনামুল হক (২৭), নুরুল হক (২০), মায়া বেগম (৪২)।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়- ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে তানিয়া আক্তারের পিতা কনা মিয়া মামলার বাদী সুফিয়া বেগমের চাচাতো ভাইয়ের মাধ্যমে কনা মিয়ার মেয়ে তানিয়া আক্তারকে সুফিয়া বেগমের দুবাই প্রবাসী ভাই মহসিন আহমেদের সাথে বিবাহের প্রস্তাব দেন। এরপর ৩ লক্ষ টাকার কাবিন, ৪ ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার ও বিবাহের দামী শাড়ীসহ অন্যান্য মালামাল প্রদানের শর্তে বিবাহের কথাবার্তা সম্পন্ন হয়। এক পর্যায়ে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে মহসিন ও তানিয়ার মধ্যে স্বাক্ষীগণের সম্মুখে ইসলামী শরিয়ত মতোবেক আক্দ অনুষ্টান সম্পন্ন হয়। এরপর থেকে মহসিন আহমেদ প্রবাস থেকে নিয়মিত স্ত্রী তানিয়ার সাথে যোগাযোগ অব্যাহত রাখেন। এমন কী বিভিন্ন মাধ্যমে বিভিন্ন সময় মহসিন আহমেদ বিদেশ থেকে তানিয়ার কাছে নগদ অর্থসহ স্বর্ণালংকার বাবদ ৮ লাখ ৩০ হাজার টাকা দেন। এরপর তানিয়ার পরিবার তানিয়ার ভাই নুরুল হককে গাড়ি কিনে দেয়ার জন্য মহসিনের কাছে ২ লাখ টাকা চাইলে চলতি বছরের মাঝামাঝি সময় প্রবাস থেকে মহসিন আহমেদ বাড়িতে এসে টাকা দেবেন এবং বিবাহের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করবেন বলে আশ্বাস দেন। পরবর্তীতে গত (১৬ মে) গণমাধ্যমের প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে জানতে পারেন তানিয়া আক্তার প্রতারণার মাধ্যমে অন্যত্র বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন। এ বিষয়ে প্রবাসী মহসিনের বোন বাদী সুফিয়া বেগম তানিয়ার পরিবারের সাথে কথা বলতে গেলে তানিয়ার পরিবার বিবাহের আকদ,টাকা স্বর্ণালংকার নেয়ার কথা অস্বীকার করে মহসিনের পরিবারের সাথে খারাপ আচরণ করে বাড়ি থেকে তাড়িঁয়ে দেন।
এ প্রসঙ্গে মামলার বাদী সুফিয়া বেগম বলেন- আমার প্রবাসী ভাইয়ের সাথে ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার পরও তানিয়া আমার ভাই এবং আমার পরিবারের সাথে প্রতারণা করে আর্থিক ক্ষতিসাধন করে অন্যত্র বিবাহ করেছেন। আমি নিরুপায় হয়ে প্রতারণার ঘটনায় জড়িত তানিয়াসহ অন্যান্য জড়িতদের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে মামলা দায়ের করেছি।বিজ্ঞ আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ প দিয়েছেন, আমরা আশা করছি আদালতে আমরা ন্যায় বিচার পাবো।
এ বিষয়ে তানিয়া আক্তারের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তার স্বামী এম এ মুনিম চৌধুরী বাবু জানান- মামলার ঘটনায় তানিয়া আক্তার কোনো মন্তব্য করতে রাজি নন।
উল্লেখ্য- গত (১৫ মে) হবিগঞ্জ-১ আসনের সাবেক এমপি জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান ও নবীগঞ্জের কুর্শি গ্রামের বাসিন্দা এম এ মুনিম চৌধুরী বাবুর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন গজনাইপুর ইউনিয়নের সাতাইহাল গ্রামের কনা মিয়ার মেয়ে তানিয়া আক্তার। জাঁকজমকপূর্ণ ভাবে বিয়ের অনুষ্ঠানটি সম্পন্ন হলে বিভিন্ন গণমাধ্যম এনিয়ে ফলাও করে সংবাদ প্রকাশ করেন গণমাধ্যম কর্মীরা৷