সারাদেশে মাছ ধরায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে শুক্রবার মধ্যোরাত থেকে সাগরে যাচ্ছে উপকূলীয় জেলেরা ॥

প্রকাশিত: ১০:৪৭ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৮, ২০২২

কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি   ঃ  দেশে মাছের প্রজনন বাড়ানোর জন্য গত ৬
অক্টোবর থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে
সরকার। সরকারী এ নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে শনিবার দিবাগত রাত ১২টায়। শুক্রবার
রাত ১২টার পর মৎস্য শিকারিরা নামছে ইলিশের সন্ধানে, ইলিশ শিকার করে ঋণের
বোঝা দূর করবে এ স্বপ্ন নিয়ে ২৯ অক্টোবর শনিবার মধ্যোরাত থেকে আবারো নতুন
স্বপ্ন নিয়ে মাছ ধরতে সাগরে যাবেন দক্ষিন উপকূলের জেলেরা। সারাদেশে টানা
২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে গভীর সমুদ্রে মাছ শিকারে যাওয়ার প্রস্তুত
কুয়াকাটাসহ মহিপুর, আলিপুর গঙ্গামতি জেলেরা। এজন্য ট্রলার মেরামত, নতুন
জাল তৈরি ও পুরনো জাল সেলাইসহ সমুদ্রে মাছ ধরার সব কাজ শেষ করেছেন তারা।

মহিপুর মৎস্য বন্দরের একাধিক জেলেরা জানান, ইলিশের ভরা মৌসুমে তেমন মাছ
না পেয়ে উপকুলের জেলেরা অনেকেই ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন। তারপরও সরকারের আইনের
প্রতি শ্রদ্ধা রেখে মাছ শিকার থেকে বিরত ছিলেন তারা। অবরোধ শেষে সমুদ্রে
ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়লে দেনা পরিশোধ করতে পারবেন তারা। কুয়াাকাটার
জেলে মোবারক মিয়া বলেন, আমরা সব সময় সরকারি নির্দেশ মেনে গভীর সমুদ্রে
মৎস্য শিকার করি। এবারো সরকারি নির্দেশ মেনে গভীর সমুদ্রের ২২ দিনের জন্য
মৎস্য শিকার বন্ধ রাখি। আশা করছি সাগরে প্রচুর পরিমাণ ইলিশ ধরা পড়বে
আমাদের জালে।

মৎস্য বন্দর আলীপুরের জেলে আ: ছত্তার মুন্সী বলেন, সরকার ঘোষিত ২২ দিনের
নিষেধাজ্ঞা পালন করেছি। এরই মধ্যে ইলিশ মাছ ধরার সব প্রস্তুতি শেষ করেছি
আমরা। নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ায় অপেক্ষায় ছিলাম। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে
শুক্রবার মধ্য রাত থেকে মাছ শিকারে যাবো।

কুয়াকাটা আশার আলো পুনর্বাসন মৎস্যজীবী জেলে সমবায় সমিতি সভাপতি মো:
নিজাম শেখ বলেন, নিষেধাজ্ঞাকালীন সময় প্রতিবেশী দেশের জেলেরা বাংলাদেশের
জলসীমানায় মাছ ধরতে না পারতো। তাহলে জালে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়তো। আমাদের
জেলেরা দেনা-পাওনা দিয়ে ভালোভাবে থাকতে পারতো।

আলীপুর-কুয়াকাটা মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. আনসার উদ্দিন মোল্লা
জানান, আমরা জেলেদের সরকারি সহযোগিতা করেছি। সবসময় কুয়াকাটার জেলেদের
পরামর্শ দিয়েছি আমরা। জেলে পাড়াগুলোতে গিয়ে দেখলাম তারা সাগরে যাওয়ার
জন্য ব্যস্ত সময় কাটাছে। মধ্যোরাত থেকেই তারা মাছ শিকারে  সাগরে যাচ্ছে।

এবিষয়ে কলাপাড়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, ২২ দিনের
নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়  আমাদের অনেকটাই সহযোগিতা করছেন উপকূলের জেলেরা।
শুক্রবার সকাল থেকেই দেখছি জেলেরা ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে। গভীর সমুদ্রে
যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। সরকারিভাবে  জেলেদের সহযোগিতা করা হয়েছে। আমরা
দিনরাত মা ইলিশ রক্ষায় কাজ করেছি। শতভাগ সফল হয়েছি বলে আশা করছি। কারণ,
নিষেধাজ্ঞাকালীন সময় ঘুর্নীঝড় সিত্রাংয়ের ফলে প্রচুর বৃষ্টি হয়েছে।
বৃষ্টি হলে ডিমওয়ালা মা-মাছগুলো দ্রুত ডিম ছেড়ে দেয়। এতে সমুদ্রে প্রচুর
পরিমাণ ইলিশ মাছ ধরা পড়বে বলে আশা ব্যক্ত করেন।




error: Content is protected !!