মিঠুন গোস্বামী রাজবাড়ীঃ
সনাতন ধর্মালম্বী প্রায় ২৩ গ্রামের মৃত মানুষের দাহ ও সমাধী করার এক মাত্র বি-কয়া সর্বজনীয় মহা শ্মশান টি গড়াই নদীতে বিলীন হওয়ার পথে। বি-কয়া সর্বজনীয় মহা শ্মশান টি রাজবাড়ী জেলা কালুখালি উপজেলাধীন সাওরাইল ইউনিয়নের বি-কয়া গ্রামে অবস্থিত।
প্রতি বছর বর্ষা মৌসুম আসলেই গড়াই নদীতে ভাঙ্গন দেখা দেয়। আবার পানি কমতে থাকলেও একইভাবে ভাঙতে থাকে, তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের তেমন কোন নজর নেই এই শ্মশান টি রক্ষায় স্থানীয়দের দাবী।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শ্মশান এলাকায় নদীর পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। মৃত মানুষের দাহ ও সমাধী করার করার স্থলে নদীর পানি উঠে গেছে। শ্মশানের ঘরেও নদীর পানি ঢুকতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যে বিলীন হয়ে গেছে শত শত সমাধী স্থল।
প্রায় ২শত বছরের পুরনো এই শ্মশান টির সর্বশেষ সংস্কার করা হয়েছে ২০১৬ সালে। আশেপাশের প্রায় ২৩ গ্রামের মানুষের এটি একমাত্র শ্মশান। এই এলাকার ইতিহাস ঐতিহ্য বহন করে চলেছে এটি।
স্থানীয়রা জানান, আমাদের এই ২৩টি গ্রামের মানুষের শ্বৎ কাজ করার একটি মাত্র শ্মশান। তাও এবার বুঝি নদী গর্ভে বিলীন হতে বসেছে। এর আগে ও ভাঙনে অনেক সমাধী স্থল নদীতে চলে গেছে। কিন্তু এবার শ্মশানের পুরোটায় বিলীন হতে পারে।
এসময় তারা আরও বলেন, এটি চলে গেলে আমাদের কষ্টের শেষ থাকবে না, কারন অন্য ধর্মের মানুষ ইদানিং কারো বসত বাড়ির আশে পাশে মৃত মানুষ পুরাতে দেয় না। যদিও আমরা নিজেদের যাইগাতে পুরাতে যায়, তবুও তাদের আপত্তি থেকেই যায়।
শ্মশানের বিষয়ে সাওরাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: শহিদুল ইসলাম (আলী) বলেন,আমি ছোট থেকেই এলাকার বৃদ্ধদের কাছে শুনেছি প্রায় ২শত বছর আগে এই শ্মশানটি স্থাপিত হয়েছিল। ভাঙনের ব্যাপারে বলেন প্রতি বছরই ভাঙে। তবে গত দুইবছর আগে এখানে কিছু জিওব্যাগের কাজ করা হয়েছিল। ২০২৬ সালে শ্মশানটির উন্নয় কাজ করা হয়েছে। অতি দ্রুত ভাঙ্গন রোধ করা না হলে নদী গর্ভে বিলিন হয়ে যাবে শ্মশানটি। জিওব্যাগ দিয়ে কোন ভাবেই ভাঙ্গন রোধ করা সম্বভ না। শুধু শুধু সরকারের টাকা অপচয়। ব্লোক দিয়ে নদীতে বাধ দেওয়া হলে ভাঙ্গন রোধ করা সম্বভ বলে জানান তিনি।
এবিষয়ে রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী (পাউবো) আহাদ হোসেন জানান, গত বছর জিওব্যাগ ফেলে ভাঙ্গন রোধ করার চেষ্টা করা হলেও আশানুরূপ হয়নি। জিওব্যাগ ফেলে ভাঙনরোধ করা সম্ভব হবে না। তবে বিষয়টি আমি অবগত হয়েছি। সরেজমিন প্রদক্ষিণ করে অতি দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্তা গ্রহণ করা হবে।