অনেক শিশুই ঘুমের মধ্যে নাক ডাকে। শীতকালে এই সমস্যাটা বেশি দেখা দেয়। বিশেষ করে যেসব শিশুর অ্যালার্জি ও শর্দিজনিত সমস্যায় ভোগে তাদের মধ্যে নাক ডাকার প্রবণতা বেশি।
নাক ডাকা একটি অত্যন্ত অস্বস্তিকর সমস্যা। ঘুমের মধ্যে নাক ডাকা অনেক শিশু টের না পেলেও এটি তার স্বাস্থ্যের জন্য বেশ ঝুঁকিপূর্ণ।
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, মাঝবয়সীদের মধ্যে ৪০ শতাংশ পুরুষ ও ২০ শতাংশ নারী ঘুমের মধ্যে নাক ডাকেন। সাম্প্রতিক বেশ কয়েকটি সমীক্ষা বলছে, গড়ে প্রতি দু’জন ব্যক্তির মধ্যে একজন নাক ডাকেন। তবে নাক ডাকা কিন্তু বড়দের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। শিশুদের মধ্যেও ক্রমশ বাড়ছে এই সমস্যা। অনেক ক্ষেত্রে শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা, শরীরের মাত্রাতিরিক্ত ওজন ও অন্য বেশ কিছু কারণে নাক ডাকার সমস্যা হতে পারে।
তবে বেশিরভাগ মা বাবা মনে করেন সর্দি অথবা অ্যালার্জির কারণেই হয়তো শিশু নাক ডাকে। আর সর্দি অথবা অ্যালার্জির কারণেই হয়তো শিশুর নাক বন্ধ হয়ে যায়। তাই ঘুমোলেই শিশু নাক ডাকে। আর এই ধারণার উপর ভিত্তি করেই চলেই চিকিৎসা।
শিশুর নাক ডাকার এই সমস্যা বন্ধ করতে নাজাল ড্রপ, ইনহেলার বা অ্যান্টি অ্যালার্জি ওষুধপত্রের উপর ভরসা করেই শিশুর নাক ডাকার সমস্যা নিরাময়ের চেষ্টা করা হয়।
ভারতের প্রখ্যাত নাক কান গলা বিশেষজ্ঞ ডা. তুষারকান্তি ঘোষ জানান, ছোটদের মধ্যে নাক ডাকার সমস্যা হওয়ার কারণ মূলত বড় অ্যাডিনয়েড ও টনসিল। এর মধ্যে মূলত অ্যাডিনয়েডই দায়ী শিশুদের নাক ডাকার সমস্যার জন্য।
অ্যাডিনয়েড কী
অ্যাডিনয়েড হল নাশারন্ধ্রের পেছনে জিভের উপরের দিকে থাকা একটি মাংসপিণ্ড বা কোষের সমষ্টি। এটি আকৃতিতে বেশি বড় হয়ে গেলে তা শ্বাস-প্রশ্বাসের পথে বাধা সৃষ্টি করে। যার ফলে শিশু নাক ডাকার সমস্যায় ভোগে।
চিকিত্সা
অ্যাডিনয়েড বড় হয়ে গেলে কেটে ফেলতে হবে। এ বিষয়ে ডা. তুষারকান্তি ঘোষ জানান, কুবলেশন পদ্ধতি অবলম্বনে প্রায় বিনা রক্তপাতে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই অ্যাডিনয়েডের অস্ত্রোপচার করা সম্ভব। অস্ত্রোপচারের ৫ ঘণ্টার মধ্যেই শিশু স্বাভাবিক জীবন শুরু করতে পারে। আর অস্ত্রোপচারের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মধ্যেই পুরোপুরি সেরে ওঠা সম্ভব।