ওসমান গনি।
সংবাদপত্র কে বলা দর্পণ। মানে আয়না। মানুষ আয়নার মাধ্যমে যেমন তার নিজের অবয়ব অতি অনাসয়ে দেখতে পায় ঠিক সেভাবে সংবাদপত্রের মাধ্যমে ও শুধু দেশ নয় সারাবিশ্বের চেহারা দেখতে পায়। বিশ্বের কোথায় কি? কখন ঘটল তা অতি অনাসয়ে জানতে ও দেখতে পারে। এটা পূর্বে কিছুটা কম ছিল। কিন্তু বর্তমানে এই তথ্যপ্রয়ুক্তির যুগে এর সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। বর্তমানে বিশ্বের কথা বাদই দিলাম বর্তমানে আমাদের বাংলাদেশে প্রিন্ট, অনলাইন ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়া যে কি পরিমানে বাড়ছে তার কোন সঠিক সংখ্যা এখনও নির্ণয় করা সম্ভব হচ্ছে না। এটা একটা গণতান্ত্রিক দেশের জন্য শুভ লক্ষণ নয়। যেহেতু দেশ এখন সারাবিশ্বের সাথে পাল্লা দিয়ে অর্থনৈতিক ও তথ্যপ্রয়ুক্তিতে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তথ্যপ্রয়ুক্তির অবাধ ব্যবহারের কারনে বর্তমানে আমাদের এই ছোট্ট আয়তনের বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশী গণ্যমান্য বেশী পরিলক্ষিত হয়। সংবাদপত্রে কাজ করছে কেউ আবার করে নাই এমন লোকদের এখন দেখা যায় প্রিন্ট, অনলাইন ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিক। শুধু সাংবাদিক নয় অনেকই এখন সম্পাদক ও হয়ে গেছেন। এর কারন হলো গণমাধ্যমের ওপর সরকারের কোন নীতিমালা না থাকা। যে যেভাবে পারছে অনলাইন পত্রিকা চালাচ্ছে। একটি কম্পিউটার বা স্মার্ট ফোন থাকলেই হলো। নামে বেনামে অনলাইন পত্রিকা চালাচ্ছে। যাদের কোন অফিস বলতেও কিছু নাই।বাসাবাড়িে, দোকানে বসে পত্রিকা চালাচ্ছে। বড় বড় মাপের পত্রিকাগুলো হতে নিউজ কপি করে তাদের নিজেদের সাইটে আপডেট দিচ্ছে।
শুধু এখানেই সীমাবদ্ধ নয় তারা তারা তাদের পত্রিকায় অনেকই ব্যুরোপ্রধান, জেলা, উপজেলা,বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সংবাদদাতা ও প্রতিনিধি ও নিয়োগ করছে শর্তসাপেক্ষে। শর্তগুলোর মধ্যে একটি শর্ত হলো আউডি কার্ড বিক্রি। আবার অনেক পত্রিকা প্রতিনিধিদের বলে আইডি কার্ড নিতে টাকা লাগবে না তবে আমাদের পত্রিকার উন্নয়নের জন্য আপনাকে এত টাকা দিতে হবে। শর্তমেনে টাকা দিলে আইডি কার্ড দেয়া হয়। তাতে মেয়াদ দেয়া ৬-১২ মাস। মেয়াদ শেষ হওয়ার পর আবার কার্ড নবায়ন করতে হবে। সেখানেও আবার টাকা। টাকা না দিলে আর কার্ড দেয়া হবে না, তার মানে হলো তার সাংবাদিকতা শেষ। এভাবেই বর্তমানে দেশের বেশীরভাগ অনলাইন পত্রিকাগুলো চাঁদাবাজি করছে। আর পত্রিকাগুলোর সাংবাদিকরা অফিসের চাদার টাকা জোগার করতে গিয়ে তারা তাদের নিজেদের গলায় পত্রিকা থেকে দেয়া কার্ড ঝুলিয়ে নিজেদের কে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়ছে। আমরা প্রায় সময় আমাদের দেশের বড় বড় মাপের পত্রিকায় সংবাদ দেখি ইয়াবাসহ সাংবাদিক গ্রেফতার, নারী কেলেঙ্কারিসহ আরও অন্যান্য অপরাধমূলক কাজে সাংবাদিক জড়িত। এরা আসলে সাংবাদিক না, এরা হলো সমাজের তথা দেশের একটা মিডিয়া কীট। এই মিডিয়া কীটের কারণে আজ দেশের সম্মানজনক সাংবাদিকতা পেশাটি জলাঞ্জলিতে যাচ্ছে। এই হলুদ, কীট সাংবাদিক, চাঁদাবাজ সাংবাদিক ও বাটপারদের কারনে দেশের স্বনামধন্য সাংবাদিকদের পেশার উপর হলুদ রং এর আচর লাগছে। আজ কোথায়ও সাংবাদিক পরিচয় দিতেও নিজেদের কে ছোট মনে হচ্ছে। কোন এক সময় সাংবাদিক পরিচয় দিলে বিভিন্ন অফিস আদালতে, মানুষ খুব ইজ্জত ও সম্মান করত। কিন্তু বর্তমানে এমন অবস্থা সাংবাদিক পরিচয় দিলে অনেক মানুষ আতংকে উঠেন। তার কারন হলো তারা এখন মনে করেন সাংবাদিক হলো চাঁদাবাজ। এ এজন্য ই তারা সাংবাদিকদের হীনচোখে দেখেন। এক কথায় বর্তমানে মিডিয়া জগতে চলছে হযবরল অবস্থা। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে সরকারীভাবে সরকারী তালিকাভূক্ত মিডিয়াগুলো রেখে অচিরেই হলুদ সংবাদপত্র ও হলুদ সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে কঠোর হতে হবে। নতুবা এ হলুদ সাংবাদিকদের কারনে সরকারের সকল উন্নয়ন ম্লান হয়ে যেতে পারে। হলুদ সাংবাদিকতার কারনে বিশ্বের কাছে বাংলাদেশ তার অর্জিত আস্থা হারিয়ে ফেলতে পারে নিমিষেই।