নিজস্ব প্রতিনিধি- আসন্ন দুর্গা পূজাকে সামনে রেখে হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জে শিল্পীদের নিপুণ হাতে চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ। উপজেলার বিভিন্ন মণ্ডপে কারিগররা ফুটিয়ে তুলছেন দুর্গা, লক্ষী, স্বরস্বতী, গণেশ ও কার্তিকের প্রতিমা। কোনো মণ্ডপে চলছে অবকাঠামো তৈরি আবার কোথাও চলছে মাটি দিয়ে প্রতিমা তৈরির কাজ।
হিন্দু ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গা পূজা ঘনিয়ে আসায় যেন দম ফেলার ফুরসৎ নেই আজমিরীগঞ্জের প্রতিমা কারিগরদের। অপরদিকে দেবী দুর্গাকে ঢাঁক, ঢোল, উলু আর শঙ্খ ধ্বনিতে বরণ করতে অধীর আগ্রহে প্রহর গুনছেন ভক্তকুল।
সরেজমিনে শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর) উপজেলার বিভিন্ন পুঁজা মণ্ডপে ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন আকার আর নানা সব কারুকাজে দেবী দুর্গার প্রতিমা বানানোর ব্যস্ততা। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কাঁদামাটি, খড়, বাঁশ এবং সুতলি দিয়ে তৈরি হচ্ছে প্রতিমা। প্রতিমার পূর্ণ রুপ দিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎ শিল্পীরা।
করোনা পরিস্থিতিতেও আশানুরূপ প্রতিমা তৈরির কাজ পেয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় প্রতিমা কারিগরেরা।
পৌরসভার মৃৎ শিল্পী ঝন্টু পাল বলেন- ‘করোনা পরিস্থিতিতেও যথেষ্ট ভাল কাজের অর্ডার পেয়েছি। আমার সাথে আরো চারজন নিয়ে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছি। আশা করছি ভালভাবে কাজগুলো শেষ করতে পারবো, সেই সাথে দুটো পয়সা আয়ও হবে।’
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ আজমিরীগঞ্জ উপজেলা শাখার সভাপতি জীবন চন্দ্র চন্দ জানান, চলতি বৎসরে উপজেলায় সার্বজনীনভাবে ৩৮টি ও ব্যক্তিগতভাবে ১টি সহ মোট ৩৯টি মণ্ডপে অনুষ্ঠিত হবে শারদীয় দুর্গা উৎসব। তন্মধ্যে পৌরসভায় ৮টি, সদর ইউনিয়নে ৩টি, শিবপাশায় ১টি, কাকাইলছেও ৬টি, জলসুখায় ৪টি এবং বদলপুরে ১৬টি সার্বজনীন ও ১টি ব্যক্তিগত মণ্ডপে হবে দুর্গা পূজা। স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রতিটি মণ্ডপে পূঁজা উদযাপণের জন্য ইতোমধ্যে সকলকে মৌখিকভাবে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয়ভাবে দিকনির্দেশনা এখনো পাইনি, তবে শীঘ্রই পেয়ে যাব। উপজেলা পূজা উদযাপন প্রস্তুতি সভায় প্রত্যেক কমিটিকে কেন্দ্রীয় দিকনির্দেশনা জানিয়ে দেয়া হবে।
আগামী ১১ অক্টোবর মহাষষ্টীতে দেবী বোধনের মধ্য দিয়ে শুরু হবে পূজার আনুষ্ঠানিকতা। তারপর ১২ অক্টোবর সপ্তমী, ১৩ অক্টোবর অষ্টমী, ১৪ অক্টোবর নবমীর পর ১৫ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে দেবী প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এ বৎসরের শারদীয় উৎসব।
এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম জানান- আসন্ন শারদীয় দুর্গা পূজা উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে পূজা উদযাপনের জন্য সকল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে নিয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে মিটিং করা হবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ বাহিনী ও আনসারসহ নিরাপত্তা নিশ্চিতে সবধরণের নির্দেশনা দেয়া হয়।