উমার রাযী:
আসমানী গ্রন্থসমূহ (কিতাব) অবতীর্ণ করার উদ্দেশ্য হল, মানুষকে হিদায়াত ও পথ প্রদর্শন করা। আর উক্ত উদ্দেশ্য তখনই অর্জন হবে, যখন সেই গ্রন্থ এমন ভাষায় হবে, যে ভাষা তারা বুঝতে পারবে। এই জন্যই সমস্ত আসমানী গ্রন্থ যে জাতির হিদায়াতের জন্য অবতীর্ণ করা হয়েছে সে জাতির ভাষায় অবতীর্ণ করা হয়েছে। অবশ্য পবিত্র কুরআনুল কারীম সর্বশেষ আসমানী কিতাব এবং এটি সমগ্র মানব জাতির জন্য পথনির্দেশ। তবে এটি যেহেতু সর্বপ্রথম আরববাসীদেরকে লক্ষ্য করে অবতীর্ণ করা হয়েছে, সেহেতু তা আরবী ভাষায় অবতীর্ণ হয়েছে যাতে তারা আল্লাহর কালামকে সহজেই বুঝতে পারে। কিন্তু যারা আরবি বুঝে না তাদেরকে অবশ্যই অনুবাদ পড়ে অথবা আরবি শিখে কুরআন বুঝার চেষ্টা করতে হবে, সেই চেষ্টা না করে শুধ না বুঝে তিলাওয়াত
বা আবৃত্তি করলে “কিতাবের প্রতি বিশ্বাসের হক আদায় হবে না। কারণ বুঝার জন্য ও মানার জন্য পাঠানো হয়েছে, শুধু আবৃত্তি করার জন্য কোরআন অবতীর্ণ হয়নি।
অথচ বর্তমানে আল্লাহর কালাম আল কুরআনকে শুধু তিলাওয়াত বা আবৃত্তির বিষয় বানানো হয়েছে। মসজিদগুলোতে ‘কিতাবের তালিমে’র কথা বলে তিন বেলা অর্থ সহ হাদীস (তাবলীগি নেসাব) পাঠ করা হলেও ভুলেও একবার অর্থ সহ কুরআন তালিম করা হয় না। আর এর মাধ্যমে মূলতঃ যে উদ্দেশ্যে কুরআন
নাযিল করা হয়েছে – আল্লাহর হুকুম জানা, তাঁর আদেশ নিষেধ সম্পর্কে অবহিত হওয়া -সেই উদ্দেশ্যকেই ব্যাহত করা হচ্ছে।
আল্লাহ মাফ করুন, আমরা আমাদের অগোচরে কুরআনের বিপক্ষ অবস্থান নিচ্ছি কি না তা ভেবে দেখা দরকার। কারণ আল্লাহ এ ব্যাপারে হুশিয়ারি দিয়ে বলেছেন –
“আর যারা আমার আয়াতগুলোর উদ্দেশ্য ব্যর্থ করার জন্য চেষ্টা চালায়, তারাই হল জাহান্নামের বাসিন্দা” (২২ঃ৫১)