বস্ত্র উৎপাদন বহুমুখীকরণের ওপর জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তাদের রপ্তানি আয় বৃদ্ধির লক্ষ্যে নতুন বাজার খুঁজে বের করার আহ্বান জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি মনে করি বিশ্ব বাজারের সঙ্গে ধারাবাহিকতা রেখে টেক্সটাইল পণ্যগুলোর বৈচিত্র্যকরণ করা খুব প্রয়োজন।
তিনি বলেন, ‘একই জিনিস সব সময় চলে না। পোশাকের ক্ষেত্রেও তার ডিজাইন, রং এবং সবকিছু পরিবর্তন করতে হয়।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘জাতীয় বস্ত্র দিবস-২০১৯’ এবং ‘বহুমুখী বস্ত্রমেলা’র উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির ভাষণে এ সব বলেন।
তিনি বলেন, ‘একই সঙ্গে আমাদের বিদ্যমান পণ্যগুলোর ক্ষেত্রে ‘ভ্যালু অ্যাড’ এবং দেশের রপ্তানি আয় বাড়াতে নতুন নতুন বাজারের সন্ধান করতে হবে।’
তিনি বলেন, এখন বিশ্ব পোশাক বাজারে বাংলাদেশ দ্বিতীয় অবস্থান অধিকার করে আছে। বাস্তবিক ক্ষেত্রে তা বিশ্ব বাজারের মাত্র ছয় দশমিক ৪০ শতাংশ। তাই আমাদের এই বিষয়টিতে নজর দিতে হবে।
তিনি বলেন, বিশ্ব বাজারে আমাদের পণ্যের চাহিদা বাড়ানোর জন্য আমাদের কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। আমাদের এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য স্বল্প, মধ্য এবং দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে।
তিনি একই সঙ্গে বাজার সম্প্রসারণ এবং বস্ত্র খাতের প্রসারের জন্য বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক বাজারে ক্রেতাদের সঙ্গে যতটুকু সম্ভব দরাদরি করে পণ্যের উপযুক্ত মূল্য আদায়েও ব্যবসায়ীদের মনোযোগী হওয়ার পরামর্শ দেন।
বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় আয়োজিত অনুষ্ঠানে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী সভাপতিত্ব করেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মুন্নুজান সুফিয়ান, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান মির্জা আজম এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব লোকমান হোসেন মিয়াঁ অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
অনুষ্ঠানে বস্ত্র খাতে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ৯টি সংস্থা এবং উদ্যোক্তাদের প্রধানমন্ত্রী পুরস্কার বিতরণ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোন সিজনে বা বছরের কোন সময়ে কোন রংটা বেশি প্রভাব ফেলে- এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই আমাদের উৎপাদন বহুমুখীকরণ করা প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। আর এ জন্য আমাদের কিছু স্বল্পমেয়াদি, মধ্যমেয়াদি এবং দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা থাকা উচিত।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি আশা করি আপনারা এ ধরনের পরিকল্পনা প্রণয়ন ও গ্রহণ করবেন এবং সরকারের পক্ষ থেকে এ ক্ষেত্রে আমরা সব ধরনের সহযোগিতা করব।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে তৈরি এসব পোশাক পার পিস খুব অল্প টাকায় আমরা বিক্রি করি। এ ক্ষেত্রে আমাদের পণ্য ক্রেতারা এক ডলার করেও যদি দাম বাড়াত তাহলে মনে হয় এ খাতটাকে আমরা আরো উন্নত করতে পারতাম।
তিনি বলেন, যেহেতু প্রতিযোগিতার একটা ব্যাপার থাকে সেহেতু আমাদের রপ্তানিকারকরা বায়ারদের সঙ্গে এই ‘বার্গেনিংটা’ করেন কি না আমি বলতে পারব না। কিন্তু আমার মনে হয় একটু করা উচিত। বায়ার বা দেশগুলোকে বিষয়টি বলা উচিত।
প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন যে, যেসব দেশে আমাদের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয় সেসব দেশ সফরে গেলে তাদের
সরকার প্রধানদের কাছে তিনি নিজে বিষয়টি তুলে ধরেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি একা তুলে ধরলে হবে না। আপনারা যারা ব্যবসা করেন তাদেরও বোধ হয় একটু উদ্যোগ নিতে হবে।’
খবর: বাসস।