আমাজনের প্রধান নির্বাহী (সিইও) জেফ বেজোসের মোবাইল ফোন হ্যাকের ঘটনায় সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের হাত থাকতে পারে বলে ধারণা করছে জাতিসংঘ।
২০১৮ সালে হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠিয়ে বেজোসের ফোনের সব তথ্য হাতিয়ে নেয়া হয়েছিল। সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের ব্যক্তিগত ফোন দিয়ে এই হ্যাকের ঘটনা ঘটে।
আলজাজিরা জানায়, এই ঘটনায় বুধবার দ্রুত তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা।
জেনেভায় এক বিবৃতিতে জাতিসংঘের স্পেশাল রেপোর্টার্স অ্যাগনেস ক্যালামার্ড এবং ডেভিড ক্যাই বলেন, ‘বেজোসের ফোনসহ অন্য আরও হ্যাকিংয়ের অভিযোগের ঘটনা যুক্তরাষ্ট্র ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত তদন্তের দাবি করছে।’
জাতিসংঘের তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠানোর মাধ্যমে ইসরায়েলের এনএসও গ্রুপের পেগাসাস-থ্রি এর মতো ম্যালওয়্যার বেজোসের ফোনে ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে, এমন কিছু তথ্য পেয়েছেন তারা।
তারা জানান, মোহাম্মদ বিন সালমানের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট থেকে এই বার্তা পাঠানো হয়েছে। ফলে বেজোসের ফোন হ্যাকের পেছনে সৌদি যুবরাজের সম্পৃক্ততাকে ইঙ্গিত করছেন তারা।
গত বছর হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠানোর মাধ্যমে অন্তত ২০টি দেশের সরকারি কর্মকর্তা, কূটনৈতিক, মানবাধিকার কর্মী ও প্রভাবশালী সাংবাদিকের ফোন হ্যাক করার অভিযোগ আছে ইসরায়েলি অনলাইন নিরাপত্তা বিষয়ক কোম্পানি এনএসও গ্রুপের বিরুদ্ধে।
তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাসহ একাধিক ঘটনায় তথ্যচুরির অভিযোগ রয়েছে গ্রুপটির বিরুদ্ধে।
জামাল খাশোগির হত্যাকাণ্ডের জন্য সৌদি যুবরাজকে দায়ী করা হয়ে থাকে। যদিও সৌদি আদালতে তার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ আমলেই নেয়নি।
ওয়াশিংটন পোস্টের কলামিস্ট খাশোগি ছিলেন সৌদি যুবরাজের কঠোর সমালোচক। বেজোস ২০১৩ সালে মার্কিন পত্রিকাটা কিনে নেন।
জাতিসংঘের তদন্তকারীদের বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘ওয়াশিংটন পোস্টের মালিক হওয়ার কারণে বেজোস এবং তার প্রতিষ্ঠান আমাজনের বিরুদ্ধে বড় আকারের অনলাইন প্রচারণার জন্য এমন চোরাগোপ্তা হামলা চালানো হয়েছে।’
এদিকে সৌদি যুবরাজের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান আল সউদ।
সুইজারল্যান্ডে ডেভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমি ফোরামের সম্মেলনে অংশ নেয়া সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘সৌদি যুবরাজ জেফ বেজোসের ফোন হ্যাক করেছেন, এমন চিন্তা একেবারেই অর্থহীন।’