দীর্ঘ দুই বছর পর হিলি ইমিগ্রেশন দিয়ে দুই দেশে যাত্রী পারাপার শুরু
রবিউল ইসলাম সুইট, হিলি দিনাজপুর প্রতিনিধিঃ
ভারতের হিলি ইমিগ্রেশন যাত্রী গ্রহণে অনুমতি দেওয়ায় দীর্ঘ দুই বছর পরে দিনাজপুরের হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে দুই দেশের পাসপোর্ট যাত্রী পারাপার শুরু হয়েছে। এতে চিকিৎসা,ব্যবসা ও ভ্রমণসহ নানা কাজে ভারতে যেতে চাওয়া পাসপোর্ট যাত্রীদের স্বস্তি ফিরে এসেছে। বাড়তি টাকা খরচ করে বিকল্প পথে ভারতে যেতে হবে না তাদের।
আজ বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১১ টায় ভারত-বাংলদেশ দুই দেশের পাসপোর্ট যাত্রী পারাপার আবারও শুরু হয়। এতে সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে। সেই সাথে ইমিগ্রেশন এলাকায় প্রাণ চাঞ্চল্ল্য ফিরে এসেছে। ভারত থেকে পাসপোর্ট যাত্রী বাংলাদেশে ফেরত আসা এবং বাংলাদেশ থেকে পাসপোর্ট যাত্রী ভারতে গমন করতে দেখা গেছে।
হিলি দিয়ে ভারতে চিকিৎসা নিতে যাওয়া ঠাকুরগাঁও থেকে আসা মেডিক্যাল ভিসায় পাসপোর্ট যাত্রী রন্টু সাহা বলেন,আমি দীর্ঘ দিন থেকে ভারতে চিকিৎসা করি। এই পথে ভারতে যাওয়া বন্ধ থাকায় বাড়তি টাকা খরচ করে বিকল্প পথে ভারতে গিয়ে চিকিৎসা নিয়েছি। দীর্ঘ দিন পর আকাশ পথে ভিসার অনুমতি পাওয়ায় মনটা খুব খারাপ হয়েছিল। পরে গতকাল রাতে মুঠো ফোনে ঠাকুরগাঁও পাসপোর্ট অফিস থেকে আমাকে নিশ্চিত করা হয় আমি আজ হিলি ইমিগ্রেশন দিয়ে ভারতে গমন করতে পারবো। এতে আমার অর্থনৈতিক সাশ্রয় হবে এবং আমি যেখানে চিকিৎসা নিতে যাবো সেই জায়গায় এই পথে নিকটে। আমি যে খুশি বা আনন্দিত যা ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না।
হিলি ইমিগ্রেশন দিয়ে টুরিস্ট ভিসা নিয়ে ভারতে যাওয়া যাত্রী শ্রী সাধনা চন্দ্র শীল এর বাবা হরিস চন্দ্র শীল বলেন, ভারতে আমার মামা, ফুফা ও খালাতো বোন এর বাড়ি। দীর্ঘ দিন থেকে পাসপোর্টে যাত্রী পারাপার বন্ধ থাকায় তাদের সাথে দেখা সাক্ষাৎ করতে পারি নাই। ইতিপূর্বে ভিসার অনুমতি পেলেও আজ হিলি ইমিগ্রেশন দিয়ে ভারতে যেতে পারায় আমরা খুবই আনন্দিত। আমি জয়পুরহাট থেকে আমার মেয়েকে নিয়ে এসেছি। ওপারে আমার আত্মীয় স্বজনরা আসবে মেয়ে চলে গেলে আমি বাড়ি ফিরে যাবো।
হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের ওসি বদিউজ্জামান বলেন,করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় দীর্ঘদিন বন্ধের পর গত ১৬ মে থেকে হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের কার্যক্রম আবারও শুরু হয়। তবে শুধুমাত্র ভারত থেকে যাত্রীরা আসতে পারতেন। কিন্তু বাংলাদেশ থেকে পাসপোর্ট যাত্রী ভারতে যেতে পারতেন না। ভারতীয় হিলি ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ আজ থেকে যাত্রী গ্রহণে অনুমতি দেওয়ায় আবারও এই ইমিগ্রেশন দিয়ে পাসপোর্ট যাত্রী পারাপার শুরু হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, করোনার সংক্রমণ রোধে পাসপোর্ট যাত্রীদের বুস্টার ডোজ এর সনদ বা কমপক্ষে করোনার দ্বিতীয় ডোজের সনদ দেখতেছি। আর যাদের করোনার সনদ নাই তাদের আইপিসিআর এর ৭২ ঘন্টার নেগেটিভ সনদ অবশ্যই সাথে থাকতে হবে। দীর্ঘ দিন পরে হিলি ইমিগ্রেশন দিয়ে পাসপোর্ট যাত্রী পারাপার শুর“ হওয়ায় সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে।
উল্লেখ্য সারাদেশে করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় সরকারি সিদ্ধান্ত মোতাবেক ২০২০ সালের ২৩ মার্চ হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে যাত্রী যাতায়াত বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে করোনার সংক্রমণ কিছুটা কমলে ১৪ মাস পর গত ২০২১ সালের ১৬ মে কার্যক্রম শুর“ হয়। তবে এতে শুধুমাত্র ভারত থেকে পাসপোর্ট যাত্রীরা বাংলাদেশে আসতে পারতেন। যারা বিমান ও অন্যান্য ইমিগ্রেশন দিয়ে ভারতে গেছেন তারা নিজ দেশে ফেরত আসতে পারতেন এই পথ দিয়ে।