মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিকদের ভয়াবহ পরিস্থিতি জাতিসংঘে চিঠি
হাবিব হাসান মালয়েশিয়া প্রতিনিধি,
মালয়েশিয়ায় একটি ঘরে গাদাগাদি করে থাকছেন প্রবাসী অনেক শ্রমিক আটকেপড়া কর্মহীন বাংলাদেশি প্রবাসী শ্রমিকদের ভয়াবহ পরিস্থিতি ও দুর্দশার কথা উল্লেখ করে জতিসংঘকে চিঠি পাঠিয়েছেন অভিবাসী অধিকার কর্মী ব্রিটিশ অ্যাক্টিভিস্ট অ্যান্ডি হল।
ফ্রি মালয়েশিয়া টুডের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মালয়েশিয়ায় বসবাসরত কর্মহীন বাংলাদেশি শ্রমিকদের নিয়ে দেশটির কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে তেমন কোনো সাড়া না পেয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়কে (ওএইচসিএইচআর) চিঠি দিয়েছেন অ্যান্ডি হল। যেখানে তিনি বাংলাদেশি শ্রমিকদের বর্তমান পরিস্থিতি ‘ভয়াবহ’ বলে বর্ণনা করেছেন।
মানবাধিকার হাইকমিশনকে দেয়া ওই চিঠিতে সংকীর্ণ বাসস্থান, দুর্বল স্যানিটেশন, সীমিত খাবার এবং ১৮ মাসেরও বেশি সময় ধরে অতিরিক্ত নিয়োগ ব্যয়ের কারণে কীভাবে তারা ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন, তার বিশদ বিবরণ উল্লেখ করা হয়েছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনের পাশাপাশি খারাপ পরিবেশ, পাচার, অভিবাসী, দারিদ্র্য এবং ব্যবসা ও মানবাধিকার সম্পর্কিত ওয়ার্কিং গ্রুপ এবং এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অভিবাসন ও মানবাধিকার বিষয়ক সিনিয়র উপদেষ্টা পিয়া ওবেরয়ের কাছেও তিনি এসব নথিপত্র পাঠিয়েছেন।
অ্যান্ডি হল বলেন, ‘মালয়েশিয়া সরকারের মতে দেশটিতে উৎপাদন ও পরিষেবা খাতে বর্তমানে প্রয়োজনের চেয়েও আড়াই লাখ বেশি বাংলাদেশি শ্রমিক রয়েছেন। কেস স্টাডি এবং মালয়েশিয়ার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের ভিত্তিতে, আমি ইউএনএইচআরসিকে অবিলম্বে মালয়েশিয়ার পরিস্থিতি সমাধানে বিশেষ পদ্ধতি প্রয়োগ করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছি। এ ধরনের পরিস্থিতি কীভাবে ঘটতে পারে, তা খতিয়ে দেখার দায়িত্ব মালয়েশিয়ান সরকারের। তাছাড়া অভিবাসী শ্রমিকদের নিয়োগ আবেদনগুলো যদি সঠিক হয়, তাহলে দেশটিতে অতিরিক্ত শ্রমিক থাকার কথা নয়। সেক্ষেত্রে এমন মানবিক বিপর্যয়ের সৃষ্টি হতো না শ্রমিকদের স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুসারে তাদের সম্পূর্ণ মজুরিসহ সব সুযোগ সুবিধা দেওয়া উচিত।
নথিভুক্ত একটি অভিযোগের উদ্ধৃতি দিয়ে অ্যান্ডি হল জানান, অভিযোগ করা হয়েছে সেখানে ৪০০ জন বাংলাদেশি শ্রমিক থাকার ও খাবারের উপযুক্ত পরিবেশ নেই। স্বাস্থ্যসম্মত বাসস্থান না থাকায় তারা নানা ধরনের স্বাস্থ্যগত সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। একটি ঘরে প্রায় ১৪ জন আটকে থাকা শ্রমিকদের কাছ থেকে ভিডিও পাওয়া গেছে। যেখানে তাদের প্রত্যেককে খাবার কেনার জন্য ২০০ রিঙ্গিত প্রদান করা হয়েছে; যা দিয়ে মাত্র কয়েকদিন চলবে।
আবার, কোনো কোনো শ্রমিকের কাছে পাসপোর্ট অথবা কাজের ভিসা না থাকায় তারা অন্যত্র কাজ করতে পারছেন না। অভিবাসন পুলিশের আতঙ্কের মধ্যে দিয়ে দিন পার করছেন তারা।